শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
হবিগঞ্জের মাধবপুর পরিনত হচ্ছে শিল্পনগরীতে। বৃহত্তর সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলাটিতে স্থাপিত শিল্প কারখানাগুলো দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি হ্রাস করছে বেকার সমস্যা। প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস ও বিদ্যূৎ উৎপাদনের কেন্দ্র ছাড়াও এখানে রয়েছে ছোটবড় প্রায় অর্ধশত শিল্পকারখানা। বহুকাল পূর্বে উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকাতে সায়হাম গ্র“পের সায়হাম টেক্সটাইল(স্পিনিং), সায়হাম কটন, নীট কম্পোজিট, মিলাঞ্জ, ফয়সল স্পিনিং, সায়হাম কটন ইউনিট-২ চালু হয়। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৯ হাজার লোক কর্মরত আছে। সফকো স্পিনিং মিলে ৪শ জন নারী-পুরুষ কর্মরত থাকলেও নানা কারনে সায়হাম এগ্রো লিমিটেড ও সায়হাম জুট মিলটি বন্ধ রয়েছে। শাহজীবাজার মাজার গেইট এলাকাতে স্থাপিত ষ্টার সিরামিক্স ফ্যাক্টরীতে কাজ করে ৮শত লোক। আরএকে পেইন্টস লিঃ এবং আরএকে মশফ্লাই লিমিটেড এ নারী ও পুরুষ মিলে রয়েছে কয়েক শত শ্রমিক, কোয়ার্টজ সিলিকেট ইন্ডাস্ট্রিতে ২শ জন, স্টার ফরসিলিন ৪ শতাধিক এবং এস এম স্পিনিং মিলে কর্মরত রয়েছে ১২শ নারী-পুরুষ। স্কয়ার ডিনেইমস, সিপি বাংলাদেশ, তালুকদার কেমিক্যাল, শাহজিবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন, মার লিমিটেডে, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজে বিরাট অংশের জনশক্তির কর্মরত রয়েছে। উৎপাদনশীল এসব কারখানায় প্রায় ১৫হাজার লোকে কর্মসংস্থান তৈরী হয়েছে। স্থাপিত শিল্পকারখানা গুলো দেশের বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি উৎপাদিত পন্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশকে অর্থনীতি সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও আকিজ গ্লাস ইন্ডাষ্ট্রিজ, ফার্নিসার ডিরেক্টর, যমুনা স্পিনিং মিল, সায়মন গ্র“প,বাংলাদেশ হার্ডল্যান্ড সিরামিক্স, এজি সিরামিকস, সায়হাম গ্র“প, জেনিথ স্পিনিং মিল, নাহিদ ফাইন টেক্স, পাওনিয়ার গ্র“প, স্কয়ার টেক্সটাইল, মেঘনা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ, এফএল গ্র“প, বেঙ্গল পেপার ইন্ডাষ্ট্রিজ, টিকে গ্র“প, ইনডেক্স সিরামিক্স, চারু সিরামিকস, সেলিম সল্ট, মেটাডোর গ্র“প, পেরাগন সিরামিক্স, ফিলিসিটি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, বিদ্যূৎ উপকেন্দ্র এবং সরকারের একটি ৩শ মেঘাওয়াট বিদ্যূৎ কেন্দ্রের মত ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানী ভূমি ক্রয় করে নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্মাণাধীন শিল্পকারখানা গুলোতে আরো প্রায় ৫০হাজার লোকের কর্মক্ষেত্র তৈরীর পাশাপাশি এই উপজেলাটি অপার সম্ভাবনার শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাতি লাভ করবে। ২৯৪.২৮ বর্গ কিলোমিটারের প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ জনবসতির এ উপজেলাটির বুক ছিড়ে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। রেল ও সড়ক পথের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং গ্যাস ও বিদ্যূতের উৎস স্থল হওয়ায় শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাস ও বিদ্যূতের সংযোগ সুবিধা থাকায় মহাসড়কের উভয় পাশে গড়ে উঠছে শিল্পকারখানাগুলো। উপজেলার হাড়িয়া থেকে বাঘাসুরা পর্যন্ত ১২কিলোমিটার এলাকাকে শিল্পাঞ্চল ঘোষনা দিয়ে শিল্প পুলিশ ক্যাম্প এবং আবাসিক গ্যাস সংযোগ স্থাপনের দাবী জানিয়ে ২০১২সালের ৪ঠা আগষ্ট তৎকালীন জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন গণদাবী বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষে আহ্বায়ক মুহাম্মদ সায়েদুর রহমান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিকা দে জানান, মাধবপুর কে শিল্প অঞ্চল হিসাবে চিহিৃত করার জন্য কার্যক্রম চলমান আছে।
মোঃ নজরুল ইসলাম খান, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি